মহাপরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের নির্দেশনায় দেশব্যাপী চলমান মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত ২১ মার্চ, ২০২৫ তারিখে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের ১টি চৌকশ টিম কর্তৃক ঢাকা মহানগরীর হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১ লক্ষ ৬০ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৪(চার)জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়।
১। ৮০০ টি নীল রংয়ের জিপারযুক্ত পলি প্যাকেটে (প্রতি প্যাকেটে ২০০ দুইশত পিস করে) অ্যামফিটামিনযুক্ত ইয়াবা
ট্যাবলেট (২০০x৮০০)=১,৬০,০০০ (এক লক্ষ ষাট হাজার) পিস।
২। ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-৪৫৫০ নম্বরের হুন্দাই SANTAFE নামীয় প্রাইভেটকার।
জব্দকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা।
গ্রেফতারকৃত আসামীর তথ্য :
০১। মোঃ নজরুল ইসলাম @ সোহেল রানা (৩৪), পিতা- মৃত আবুল হাসেম, থানা- আড়াই হাজার, জেলা- নারায়নগঞ্জ।
হাল সাং-আদর্শবাগ, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, থানা- যাত্রাবাড়ী, ডিএমপি, ঢাকা।
০২। মোঃ আল মামুন (৩২), পিতা- মোঃ নুরুল ইসলাম, থানা- নালিতাবাড়ী, জেলা-শেরপুর। হাল সাং-থানা- ডেমরা,
ডিএমপি,ঢাকা।
০৩। মোহাম্মদ ফারুক @ ওমর ফারুক(৪৬), পিতা- মৃত আব্দুর রহমান, থানা- খুলশী, জেলা- চট্টগ্রাম। হাল সাং-
থানা- ডেমরা, ডিএমপি, ঢাকা।
০৪। তানিয়া (৩২), স্বামী- মোহাম্মদ ফারুক @ ওমর ফারুক, পিতা- মৃত আব্দুল মজিদ, থানা- খুলশী, জেলা-
চট্টগ্রাম। হাল সাং- থানা- ডেমরা, ডিএমপি, ঢাকা।
চক্রটিকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয় : প্রায় ৩ মাস আগে ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) এর সহকারী পরিচালক জনাব মো: এনায়েত হোসেন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীচক্র বায়িং হাউজ এবং আবাসন ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে বিলাসবহুল গাড়ীতে ইয়াবার বড় বড় চালান এনে ঢাকা শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারী মাদক ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করে। তখন থেকেই অধিদপ্তর তাদের উপর কড়া নজরদারী বজায় রাখলেও তাদের সুচতুর কৌশলে তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিল।
তাদের বিরুদ্ধে গত মাসে একটি অভিযান পরিচালনা করলেও তা ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ সপ্তাহ খানে আগে গোয়েন্দাসূত্রে জানা যায়, এই চক্রটি আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঁচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা টেকনাফের একটি রির্সোটে দীর্ঘ সময় ধরে হুন্দাই কোম্পানীর বিলাসবহুল গাড়ীর পাদানীর নীচে প্যানেলে বিশেষ কৌশলে ১ লক্ষ ৬০ হাজার পিস ইয়াবা ঢুকিয়ে প্যানেলটি সুনিপুনভাবে ঝালাই করে রাখেন। সর্বশেষ সংবাদের ভিত্তিতে সহকারী পরিচালক একটি চৌকস রেইডিং টিম গঠন করে গত ২১ মার্চ তারিখে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানে ঢাকা মেট্রো এলাকায় আসামীদের গাড়ীটি প্রায় ৭ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ধাওয়া করে আটক করা হয়। তাদের গাড়ী তল্লাশি করে কিছু পাওয়া না গেলে স্পটে অধিকতর তল্লাশি চালানো হয়। এতে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে বোঝা না গেলেও গোয়েন্দাসূত্রে বার বার নিশ্চিত করার পর প্যানেলের ঝালাই করা অংশটি খুলে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি এড়ানোর জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা বড় বড় ইয়াবার চালান ঢাকায় সরবরাহ ও বিক্রয় করেন।
উপর্যুক্ত মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে জনাব মো: লোকমান হোসেন, পরিদর্শক, রমনা সার্কেল বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ মোতাবেক সংশ্লিষ্ট থানায় ০১(এক)টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।মাদক ব্যবসায়ী অর্জিত অর্থ দিয়ে তারা বায়িং হাউজ ও আবাসন ব্যবসা পরিচালনা করছে মর্মে গোপনসূত্রে জানা যায় বিধায় মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ মানিলন্ডারিং করা হয়েছে কিনা তদন্ত পর্যায়ে এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। উল্লেখ্য, আসন্ন ঈদ-উল ফিতরকে কেন্দ্র করে মাদক পাচার বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, অধিদপ্তরের সদ্য যোগদানকৃত মহাপরিচালক জনাব মো: হাসান মারুফ অধিদপ্তরের এ অভিযানটিসহ অন্যান্য সকল অপারেশনাল কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছেন। তিনি মাদক ব্যবসা নির্মূল করার জন্য অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীকে আত্মনিয়োগ করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় অধিদপ্তরের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নে জোরদার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS